Header Ads

Header ADS

বাংলাদেশের জয়ের পাঁচ কারণ ও দুটি প্রশ্ন

ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতে সাফ শুরু করেছে বাংলাদেশ। কীভাবে এসেছে এই জয়? আর এই জয়েই কী পুরোপুরি তৃপ্ত হওয়া যায়? হয়তো নয়। 
যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই সাফ শুরু হয়েছে বাংলাদেশের। একটা জয় ছিল চাওয়া, মিলেছে সেটিও। তবে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স, বল পায়ে পাওয়ার পর সেটি কাজে লাগানো...সেসব নিয়ে প্রশ্ন আছে কিছু। তা সেসব প্রশ্ন ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাকুক। চোখ ফেরানো যাক বাংলাদেশের জয়ের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে—

শুরুতেই গোল পাওয়া
গোল যা হবে দ্বিতীয় মিনিটে! এটাই যেন ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের চিত্রনাট্য। পেনাল্টি থেকে প্রথম গোলটি বাংলাদেশ পেয়েছে দ্বিতীয় মিনিটে, দ্বিতীয়ার্ধে সুফিলের চোখধাঁধানো ভলির সময়ও ম্যাচের ঘড়িতে ৪৭ মিনিট। অর্থাৎ দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিট। এক গোলে এগিয়ে থাকা তো কখনোই স্বস্তির নয়, দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এই গোলটি বাংলাদেশকে দিয়েছে স্নায়ুচাপ থেকে মুক্তি।
বোতলবন্দী চেনচো
চেনচো গেলশেইন—এই একটা নাম ম্যাচের আগে ছিল বাংলাদেশের যত মাথাব্যথার কারণ। পরশু অনুশীলনের পর ওয়ালী ফয়সাল বলছিলেন, ‘ভুটানি রোনালদো’কে একা কেউ মার্ক করবে না, তাঁকে চোখে চোখে রাখা হবে পজিশনালি। যখন যে ডিফেন্ডারের দিকে থাকবেন, তিনিই চেনচোকে মার্ক করবেন। তা-ই করা হলো। উপমহাদেশের ফুটবলে সেভাবে পরিসংখ্যান রাখা হয় না, তবে ম্যাচে চেনচো সব মিলিয়ে ১০-১৫ বারের বেশি বল পায়ে পেয়েছেন কি না, সন্দেহ। গোলের সুযোগও পেয়েছেন মাত্র তিনবার। তার মধ্যে দুটি আবার বাংলাদেশের রক্ষণের ভুলের কারণে। একবার ডিফেন্ডার বাদশা পাস দিতে ভুল করায় বল পেয়েছিলেন বক্সে, আরেকবার কর্নার ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরোনো গোলরক্ষক সোহেল হিসেবে গরমিল করে ফেলায়। অন্যটি পালটা আক্রমণে উঠে। তবে একটি সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি চেনচো। নিজে হয়তো ভুল করেছেন, তবে তাঁকে চাপে ফেলেই ভুল করতে বাধ্য করেছেন বাংলাদেশের রক্ষণভাগ।

ইমন বাবুর বদলি 
কোচ জেমি ডের কৌশলই এটি ছিল কি না, কে জানে! তবে প্রথমার্ধে বাংলাদেশ উইং ধরে দ্রুত পাল্টা আক্রমণে উঠলেও মাঝমাঠে বলের নিয়ন্ত্রণ তেমন ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনিকে বদলে ইমন বাবুকে নামান জেমি। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের বলের দখল কতটা ভালো ছিল, তা তর্কসাপেক্ষ। তবে মাঝমাঠে বলের আদান-প্রদান হয়েছে আরও বুদ্ধিদীপ্ত। মাহবুবুর রহমানের সুফিলের করা দ্বিতীয় গোলে সময় ভুটান রক্ষণের ওপর দিয়ে তাঁকে বলটি পাসও দিয়েছেন ইমন।

প্রেসিং
বাংলাদেশের খেলা মন কেড়েছে দাবি করাটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। তবে জেমি ডের অধীনে বাংলাদেশ দলের খেলার একটা ধাঁচ যে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, সেটির প্রমাণ পাওয়া গেছে এই ম্যাচেও। ধাঁচ বলতে, প্রেসিং—প্রতিপক্ষের পায়ে বল গেলেই দ্রুত তা আদায় করে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়া। এশিয়ান গেমসে যা দেখা গিয়েছিল, কাল সে কৌশলে ভোগানো গিয়েছে ভুটানকেও।
জমাট রক্ষণ
ম্যাচে বাংলাদেশ বলের দখল খুব একটা আহামরি ছিল না। বাংলাদেশ ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে তো বলের দখল ভুটানেরই বেশি ছিল। তবে বাংলাদেশ গোলরক্ষক সোহেলকে তেমন চাপে পড়তে হয়নি, করতে হয়নি খুব বেশি সেভ। সেটি রক্ষণ শক্ত ছিল বলেই! চেনচোর ওই তিনটি শট ছাড়া আর তেমন সুযোগই পায়নি ভুটান।

এবং দুটি প্রশ্ন 
প্রথমত জয় এসেছে, সাফের সেমিফাইনালে ওঠার আশার সলতেও জ্বলছে আরও উজ্জ্বল হয়ে। কিন্তু এই ম্যাচ বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তুলে দিয়ে গেছে দুটি প্রশ্ন। জেমি ডে বারবারই বলেছেন, বাংলাদেশ এই সাফে টেকনিক্যালি সবচেয়ে দক্ষ নয়। পুরো ম্যাচে বল পায়ে অনেক ভুল পাস আর বল এলেই সামনের দিকে হুড়োহুড়ি করে লম্বা পাস পাঠানো যেন সেটিরই প্রমাণ রেখে গেল। ভারত-নেপাল-মালদ্বীপের বিপক্ষে যা ভোগাতে পারে।
দ্বিতীয় প্রশ্নটি জেমি ডের বদল নিয়ে। দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই যে সাদকে উঠিয়ে ফয়সালকে নামিয়ে একটু রক্ষণাত্মক হয়ে গেলেন বাংলাদেশ কোচ। অথচ তখনো ম্যাচের ৪০ মিনিটের মতো বাকি। বাকি সময়ে ভুটানের দাপট সিদ্ধান্তটা বুমেরাং হয়ে ফেরার শঙ্কাও জাগাচ্ছিল।

No comments

Theme images by latex. Powered by Blogger.