ট্রেনের বেকার যাত্রীরাঃ অসহ্য বেকারত্ব! টিউশনের টাকা পকেটে রাখায় দায় হয়ে পড়েছে বেকার যুবকটির।
ট্রেনের বেকার যাত্রীরাঃ অসহ্য বেকারত্ব! টিউশনের টাকা পকেটে রাখায় দায় হয়ে
পড়েছে বেকার যুবকটির।
একেকটা পরীক্ষা মানেই আবেদনের জন্য টাকা, একেকটা পরীক্ষা মানেই ঢাকায় যাওয়ার গাড়িভাড়া! দুপুরে পিৎজা, চিকেন বার্গার কিংবা মোগলাই বিরানীর দোকানের সামনে দিয়ে বেকার যুবকটি শুধু দীর্ঘশ্বাসে ভাল খাবারের গন্ধ নাকে নিয়ে হেটে যায় পাশের মামার টঙে, একটা ৫টাকার রুটি আর এক কাপ চায়ের জন্য।
একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তি মানেই লাখো প্রার্থীর স্বপ্নের যাত্রা।
যে ছেলেটি টেকনাফে বসে প্রস্তুতি নিচ্ছে তার প্রতিযোগি তৈরি হচ্ছে তেতুলিয়ার শেষ প্রান্তে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপসা থেকে পাঠুরিয়া;
৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চিতেই এক বেকারের বিপরীতে চাকরিযুদ্ধের লিপ্ত হচ্ছে লাখো প্রতিযোগি। যে ছেলেটি ক্লাসের ফার্স্ট বয় ছিল কিংবা যে ছেলেটি ৩৩ নাম্বারের জন্য যুদ্ধ করত পরীক্ষার আগের রাতে, যে মেয়েটি সবসময় বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্টের দিন মনে মনে আল্লাহকে ডাকত যেন সব বিষয়ে এ প্লাস থাকে, কিংবা যে মেয়েটি শুধু চেয়ে আছে গণিতে পাশ মার্কস থাকবে কি না, কারণ গণিতে পাশ করতে পারলেই সে নতুন ক্লাসে প্রমোশন পাবে! সেদিনের সব ছেলেমেয়ে আজ বেকার ট্রেনের যাত্রী। কে কোন সময় ফার্স্ট ছিল, আর কে ছিল লাস্ট বেঞ্চের স্টুডেন্ট, তার আজ কোন হিসেব নেই! এখন হিসেব শুধু একটাই- চাকরি চাই! চাকরি চাই!
:
অসহ্য বেকারত্ব! টিউশনের টাকা পকেটে রাখায় দায় হয়ে পড়েছে বেকার যুবকটির। একেকটা পরীক্ষা মানেই আবেদনের জন্য টাকা, একেকটা পরীক্ষা মানেই ঢাকায় যাওয়ার গাড়িভাড়া! দুপুরে পিৎজা, চিকেন বার্গার কিংবা মোগলাই বিরানীর দোকানের সামনে দিয়ে বেকার যুবকটি শুধু দীর্ঘশ্বাসে ভাল খাবারের গন্ধ নাকে নিয়ে হেটে যায় পাশের মামার টঙে, একটা ৫টাকার রুটি আর এক কাপ চায়ের জন্য। হায়রে জীবন! তবু মলিন মুখে একটু হাসি, সামনেই তো একটা নিয়োগ পরীক্ষা। চাকরিটা এবার হলেই হয়। প্রতিদিন নামাজের সময় কত মা যে আল্লাহকে বলেন ছেলের চাকরির জন্য, প্রতিদিন কত মা ঠাকুর ঘরে উপোস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে আপনারই একটা চাকরির জন্য, তা শুধু ঐ বিধাতায় জানে।
:
প্রতি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট,বরিশাল,খুলনা সহ সারাদেশ থেকে ঝাকে ঝাকে স্বপ্ন আসে রাতের ট্রেনে চড়ে। একটা চাকরি মানেই মায়ের স্বপ্ন পুরন, একটা চাকরি মানেই বাবার শাসনভরা চোখে সুখের আস্ফালন। একটা চাকরি মানেই ভিজিটিং কার্ডে নামের নিচে ছোট করে পদবী লেখা, একটা চাকরি মানেই অপেক্ষায় থাকা প্রেয়সীর নতুন স্বপ্ন দেখা।
:
আমি নাদিম হাসান সেই বোনটির কথা ভাবছি, যে লং জার্নি করতে পারেনা বলে দুরে কোথাও যায়নি কখনো। আর সেও চাকরি লাভের আশায় এখন নিত্য ঢাকার যাত্রি। আয়নায় যে বোনটি আগে নিজের মুখটি দেখত কতশত বার, চোখের কাজলটি একটু দিতে ভুল হলেই যে মুছত কয়েকবার, আর এখন? রাত জেগে পড়তে পড়তে চোখের নিচে যে কালি পড়ে গেছে সেদিকে তার নজরই নেই। যে ছেলেটি আগে সারাদিন দেখত ফেসবুকে ম্যাসেজের রিপ্লাই এসেছে কি না, তার ছবিতে বিশেষ কেউ কমেন্ট দিয়েছে কি না! এখন তার সেদিকে কোন খেয়ালই নেই, এখন সে দেখে পত্রিকায় নতুন কোন চাকরির বিজ্ঞপ্তি এসেছে কি না।
:
লাজুক সে মেয়েটি কিংবা ঘরকুনো ছেলেটি যে খুব একটা ঘরের বাইরে যেত না, সে এখন এক গাদা বই হাতে বিশ্বভ্রমন করে। বইয়ের প্রথম পাতায় বাংলাদেশ থেকে শুরু করে আমেরিকা, সৌদি আরর, রাশিয়া, চীন, ভারত পাকিস্তান ভ্রমন করে আসে সে কয়কঘন্টায়। মুহুর্তেই তার জানা হয়ে যায় কোন দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা কী, মুদ্রা বা রাজধানীর নাম কী? শুধু জানা হয় না, চাকরিটি তার কখন হবে! শুধু একটি চাকরির আশায় লাজুক সে বোনটি ও ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে ঢাকার শুক্রবারের রাস্তায়। এইতো সেদিন কলেজ ভর্তি হতে যে মেয়েটি বাবাকে ছাড়া যেতে পারেনি, আজ সে বড্ড আদরের মেয়েটিও চাকরির পরীক্ষা কেন্দ্র জানতে ঢাকার মৌচাক থেকে মালিবাগ, কাওরান বাজার থেকে স্বামীবাগ, সব রাস্তার মোড়ে শুধু পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে ফিরে।
:
আমি নাদিম হাসান আল্লাহর কাছে আকুল প্রার্থনা করি,তিনি যেন কষ্টের সঠিক প্রতিদান দেন, তিনি যেন সব মা বাবার মুখে এক টুকরো হাসি দেন, সবার মনের আশা পূরণ করেন। শুধু বিশ্বাস করি, বিধাতা কখনোই তার সৃষ্ট জীবকে তার কষ্ঠের প্রতিদান না দিয়ে বিমুখ করবেন না। লক্ষ্য যেখানে অটল, বিশ্বাস যেখানে অনড়, মনোবল যেখানে ইস্পাত কঠিন, স্বপ্ন যেখানে বিজয়ের; সেখানে সকল বাধা পেরিয়ে, ভাগ্যচাকা ঘুড়িয়ে ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছাবেই। সকল এডমিট কার্ড/এপ্লিকেশন লেটার একদিন হয়ে যাবে এপয়েন্টমেন্ট লেটার। আর তখনই বেলা বোসের ফোনে কল দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে গানটি , "চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো... "
Nadim Hasan
Teacher.
Easy Study
একেকটা পরীক্ষা মানেই আবেদনের জন্য টাকা, একেকটা পরীক্ষা মানেই ঢাকায় যাওয়ার গাড়িভাড়া! দুপুরে পিৎজা, চিকেন বার্গার কিংবা মোগলাই বিরানীর দোকানের সামনে দিয়ে বেকার যুবকটি শুধু দীর্ঘশ্বাসে ভাল খাবারের গন্ধ নাকে নিয়ে হেটে যায় পাশের মামার টঙে, একটা ৫টাকার রুটি আর এক কাপ চায়ের জন্য।
একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তি মানেই লাখো প্রার্থীর স্বপ্নের যাত্রা।
যে ছেলেটি টেকনাফে বসে প্রস্তুতি নিচ্ছে তার প্রতিযোগি তৈরি হচ্ছে তেতুলিয়ার শেষ প্রান্তে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপসা থেকে পাঠুরিয়া;
৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চিতেই এক বেকারের বিপরীতে চাকরিযুদ্ধের লিপ্ত হচ্ছে লাখো প্রতিযোগি। যে ছেলেটি ক্লাসের ফার্স্ট বয় ছিল কিংবা যে ছেলেটি ৩৩ নাম্বারের জন্য যুদ্ধ করত পরীক্ষার আগের রাতে, যে মেয়েটি সবসময় বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্টের দিন মনে মনে আল্লাহকে ডাকত যেন সব বিষয়ে এ প্লাস থাকে, কিংবা যে মেয়েটি শুধু চেয়ে আছে গণিতে পাশ মার্কস থাকবে কি না, কারণ গণিতে পাশ করতে পারলেই সে নতুন ক্লাসে প্রমোশন পাবে! সেদিনের সব ছেলেমেয়ে আজ বেকার ট্রেনের যাত্রী। কে কোন সময় ফার্স্ট ছিল, আর কে ছিল লাস্ট বেঞ্চের স্টুডেন্ট, তার আজ কোন হিসেব নেই! এখন হিসেব শুধু একটাই- চাকরি চাই! চাকরি চাই!
:
অসহ্য বেকারত্ব! টিউশনের টাকা পকেটে রাখায় দায় হয়ে পড়েছে বেকার যুবকটির। একেকটা পরীক্ষা মানেই আবেদনের জন্য টাকা, একেকটা পরীক্ষা মানেই ঢাকায় যাওয়ার গাড়িভাড়া! দুপুরে পিৎজা, চিকেন বার্গার কিংবা মোগলাই বিরানীর দোকানের সামনে দিয়ে বেকার যুবকটি শুধু দীর্ঘশ্বাসে ভাল খাবারের গন্ধ নাকে নিয়ে হেটে যায় পাশের মামার টঙে, একটা ৫টাকার রুটি আর এক কাপ চায়ের জন্য। হায়রে জীবন! তবু মলিন মুখে একটু হাসি, সামনেই তো একটা নিয়োগ পরীক্ষা। চাকরিটা এবার হলেই হয়। প্রতিদিন নামাজের সময় কত মা যে আল্লাহকে বলেন ছেলের চাকরির জন্য, প্রতিদিন কত মা ঠাকুর ঘরে উপোস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে আপনারই একটা চাকরির জন্য, তা শুধু ঐ বিধাতায় জানে।
:
প্রতি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট,বরিশাল,খুলনা সহ সারাদেশ থেকে ঝাকে ঝাকে স্বপ্ন আসে রাতের ট্রেনে চড়ে। একটা চাকরি মানেই মায়ের স্বপ্ন পুরন, একটা চাকরি মানেই বাবার শাসনভরা চোখে সুখের আস্ফালন। একটা চাকরি মানেই ভিজিটিং কার্ডে নামের নিচে ছোট করে পদবী লেখা, একটা চাকরি মানেই অপেক্ষায় থাকা প্রেয়সীর নতুন স্বপ্ন দেখা।
:
আমি নাদিম হাসান সেই বোনটির কথা ভাবছি, যে লং জার্নি করতে পারেনা বলে দুরে কোথাও যায়নি কখনো। আর সেও চাকরি লাভের আশায় এখন নিত্য ঢাকার যাত্রি। আয়নায় যে বোনটি আগে নিজের মুখটি দেখত কতশত বার, চোখের কাজলটি একটু দিতে ভুল হলেই যে মুছত কয়েকবার, আর এখন? রাত জেগে পড়তে পড়তে চোখের নিচে যে কালি পড়ে গেছে সেদিকে তার নজরই নেই। যে ছেলেটি আগে সারাদিন দেখত ফেসবুকে ম্যাসেজের রিপ্লাই এসেছে কি না, তার ছবিতে বিশেষ কেউ কমেন্ট দিয়েছে কি না! এখন তার সেদিকে কোন খেয়ালই নেই, এখন সে দেখে পত্রিকায় নতুন কোন চাকরির বিজ্ঞপ্তি এসেছে কি না।
:
লাজুক সে মেয়েটি কিংবা ঘরকুনো ছেলেটি যে খুব একটা ঘরের বাইরে যেত না, সে এখন এক গাদা বই হাতে বিশ্বভ্রমন করে। বইয়ের প্রথম পাতায় বাংলাদেশ থেকে শুরু করে আমেরিকা, সৌদি আরর, রাশিয়া, চীন, ভারত পাকিস্তান ভ্রমন করে আসে সে কয়কঘন্টায়। মুহুর্তেই তার জানা হয়ে যায় কোন দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা কী, মুদ্রা বা রাজধানীর নাম কী? শুধু জানা হয় না, চাকরিটি তার কখন হবে! শুধু একটি চাকরির আশায় লাজুক সে বোনটি ও ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে ঢাকার শুক্রবারের রাস্তায়। এইতো সেদিন কলেজ ভর্তি হতে যে মেয়েটি বাবাকে ছাড়া যেতে পারেনি, আজ সে বড্ড আদরের মেয়েটিও চাকরির পরীক্ষা কেন্দ্র জানতে ঢাকার মৌচাক থেকে মালিবাগ, কাওরান বাজার থেকে স্বামীবাগ, সব রাস্তার মোড়ে শুধু পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে ফিরে।
:
আমি নাদিম হাসান আল্লাহর কাছে আকুল প্রার্থনা করি,তিনি যেন কষ্টের সঠিক প্রতিদান দেন, তিনি যেন সব মা বাবার মুখে এক টুকরো হাসি দেন, সবার মনের আশা পূরণ করেন। শুধু বিশ্বাস করি, বিধাতা কখনোই তার সৃষ্ট জীবকে তার কষ্ঠের প্রতিদান না দিয়ে বিমুখ করবেন না। লক্ষ্য যেখানে অটল, বিশ্বাস যেখানে অনড়, মনোবল যেখানে ইস্পাত কঠিন, স্বপ্ন যেখানে বিজয়ের; সেখানে সকল বাধা পেরিয়ে, ভাগ্যচাকা ঘুড়িয়ে ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছাবেই। সকল এডমিট কার্ড/এপ্লিকেশন লেটার একদিন হয়ে যাবে এপয়েন্টমেন্ট লেটার। আর তখনই বেলা বোসের ফোনে কল দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে গানটি , "চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো... "
Nadim Hasan
Teacher.
Easy Study
No comments